টানা দুই দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার সকাল থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পুনরায় শুরু হয়েছে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকের পর আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেয়ায় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয় তারা।

সোমবার সকাল ৯টা থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম শুর হয়েছে। বন্দর ব্যবহারকারী ৫ সংগঠনের কর্মীরা কাজে যোগদান করেন। ফলে বন্দরে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য।

গত ২ মার্চ ভারত থেকে বন্ড লাইসেন্সের (শুল্কমুক্ত) মাধ্যমে আমদানিকৃত ডেনিম ফেব্রিক্সের ২টি চালান বহনকারী ভারতীয় ট্রাকের মধ্যে লুকিয়ে আনা প্রায় অর্ধকোটি টাকার আমদানি নিষিদ্ধ ফেনসিডিল, বিস্ফোরক দ্রব্য, সিগারেট, কারেন্ট জাল শাড়ি, থ্রি-পিসসহ বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য আটক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনায় বেনাপোলের সিএন্ডএফ শিমুল ট্রেডিং এজেন্সি ও আইডিএস গ্রুপ নামে দুটি সিএন্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। পরে সিএন্ডএফ কর্মচারী শামসুল ইসলামের নামে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আটকের দাবিতে ৩ মার্চ সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যসহ সব ধরনের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় বন্দর ব্যবহারকারী ৫টি সংগঠন। সিএন্ডএফ এজেন্ট লাইন্সেস পুনর্বহাল ও মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় তারা। ফলে বন্ধ হয়ে যায় ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যসহ বন্দরের পণ্য লোড-আনলোড।

রোববার সন্ধ্যায় কাস্টমস, বন্দর বেনাপোল সিএডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন, সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি, বন্দর হ্যন্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন, ও ট্রাক মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে কয়েক দফা বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ায় সোমবার থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয় তারা।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, আমাদের সঙ্গে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের সমস্যাগুলো অনুধাবন করে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করার আশ্বাস দেয়ায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম আগের ন্যায় চলবে বলে তিনি জানান।

বেনাপোল কাস্টম কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, উভয় পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ায় বন্দর ব্যবহারকারীরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিয়েছেন। বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাজের গতি বাড়ানোর জন্য কাস্টমসের সব কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।